যাদের ঘর করে দিয়েছি তাদের জীবন বদলে গেছে: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৯ পিএম, ১১ জুন,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:১২ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাদের জমিসহ ঘর করে দেওয়া হয়েছে তাদের জীবন বদলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘর পেয়ে দরিদ্র মানুষদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেছেন, একজন মানুষের মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য এটা জরুরি।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ পরিকল্পনার আওতায় সারাদেশে গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বেলা ১১টায় নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রান্তিক মানুষদের জীবন বদলে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চেয়েছিলেন। সেটিই আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এজন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের সেবক হিসেবেই বাবার মতো সেবা করে যাবো। এই দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত জীবন পাবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আশ্রয়ণের মাধ্যমে মানুষের যে পরিবর্তন হয়েছে, তাতে মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছ। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে সারাদেশে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এর তথ্য তিনি সংগ্রহ করছেন। যাদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দেবে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝড়ে কোথায় ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে সেই বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি। তথ্য সংগ্রহ করেছি। তাদের ঘর করে দেব। আর ক্ষতিগ্রস্তদের উপকরণ দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। আপনাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেকে ঘর যাতে করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব। প্রত্যেক এলাকা থেকে তথ্য নিয়েছি।’
এ সময় আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে যারা ঘর পেয়েছেন তাদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা আপনাদের নিজের সম্পত্তি, এটার যত্ন নেওয়া আপনাদের দায়িত্ব। বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবেন।’
কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি না থাকে সেই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনাবাদি জমিগুলো চাষের আওতায় আনুন। যে যা পারেন উৎপাদন বাড়ান। জলাশয় থাকলে সেখানে মাছের চাষ, জমি থাকলে ফসলের চাষ, ভিটি থাকলে সেখানে গাছ লাগান। অর্থাৎ যে যতটুকু পারেন উৎপাদন করুন। জাতির পিতা বলেছিলেন ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না, আমরা কারো কাছে ভিক্ষা করতে চাই না। হাত পেতে চলতে চাই না। যতটুকু আমাদের সম্পদ সেটা কাজে লাগিয়ে মাথা উঁচু করে চলব। সম্মানের সঙ্গে চলব।’
নিজের কারামুক্তির দিনটির কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকের দিনটা আমার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতেও মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আবার সেই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারও মিথ্যা মামলা দেয়। আমার সহযোগী সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, দেশের সাধারণ মানুষ সে সময় প্রতিবাদ করেছিল। আজকের দিনে অর্থাৎ ১১ জুন আমি সেই বন্দিখানা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী সুবিধাবোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে আবাসন প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।