মিল্টন সমাদ্দার ৯০০ নয়, ১৩৫ লাশ দাফন করেছেন: ডিবি হারুন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৭ পিএম, ৫ মে,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:১১ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ এর চেয়াম্যান মিল্টন সমাদ্দার তার আশ্রমে বিভিন্ন সময়ে মারা যাওয়া ৯০০ মানুষকে দাফন করেছেন তথ্যটি সত্য নয়। তা তিনি নিজের মুখেই ডিবির কাছে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তিনি মূলত ৯০০ নয়, মাত্র ১৩৫টি লাশ দাফন করেছেন। তবে এগুলোরও কোনো তথ্য তিনি রাখেননি। আর লাশের সংখ্যা বাড়িয়ে বলতেন মানুষের সহানুভূতি ও তাদের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার আশায়।
রোববার (০৫ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন বলেন, তার উচিত ছিল আশ্রমের কোনো ব্যক্তি মারা গেলে নিকটস্থ হাসপাতালকে জানানো, থানা পুলিশকে জানানো, তার আত্মীয়-স্বজনকে জানানো, সে এর কোনোটা করতো না। তিনি ৯০০ লাশ দাফন করলেন কিন্তু কোনোটার রেজিস্টার নেই। মূলত তিনি স্বীকার করেছেন ৯০০ লাশ নয়, এটি বললে তার কাছে ফেসবুকে প্রচার টাকা আসবে বলে তিনি তা প্রচার করতেন। আসলে এত না, মারা গেছে মাত্র ১৩৫ জন। আমাদের তদন্ত বাকী আছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব তিনি এ টাকাগুলো কিভাবে খরচ করতেন, কেন ডাক্তার রাখতেন না। তাকে সব বিষয়ে জবাব দিতে হবে।
ডিবিপ্রধান বলেন, যে মানুষগুলো মারা গেলেন তাদের কেন জানাজা হলো না! রাতের অন্ধকারে করব দেওয়া হলো। আত্মীয়-স্বজনকে জানানো হলো না। মিথ্যাভাবে নিজেই সিল স্বাক্ষর দিয়ে ডেথ সার্টিফিকেট বানালেন এবং বানিয়ে এগুলো রেকর্ডে রাখলেন না। তার আত্মীয়-স্বজনকে জানালেন না, আসলে এই লাশগুলো তিনি দাফন করলেন কিনা আমাদের তদন্তে আসবে।
তার আশ্রয়ে দিয়ে আসা শিশুদের তিনি কি করতেন জানতে চাইলে হারুন বলেন, আরেকটু ধৈর্য ধরেন তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তার মতো বাংলাদেশে আরও মিল্টন সমাদ্দার বা তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা থাকলে তাদের ব্যাপারেও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা মিল্টনকে আবারও রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছি, আবেদনের সাড়া আসলে আমরা আবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
মিল্টনের অ্যাকাউন্টে সর্বশেষ প্রায় কোটি টাকা ঢুকেছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাত্র কয়েকদিনে তার অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এসেছে কিন্তু তিনি এসব টাকার একটি টাকাও খরচ করেননি। তাহলে তার উদ্দেশ্যটা কি? এটাও আমরা তদন্তে নিয়ে আসছি। তিনি যদি মানবতার ফেরিওয়াই হতেন তাহলে তো তার টাকাগুলো খরচ করার কথা। রোগীদের হাসপাতালে পাঠানোর কথা।
মিল্টনের সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, মিল্টন ভয়াবহ অপরাধ করেছেন। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। এতগুলো টাকা থাকার পরও তিনি খরচ করেননি। তার অপারেশন থিয়েটারে তিনি নিজেই হেড ছিলেন। তাকে যারা পেট্রোনাইজ করেছে, ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য কাজ করেছে, তাকে যারা হেল্প করেছে, তার ফাউন্ডেশনে যারা মেম্বার রয়েছে আমরা প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।