তুরস্কে ভূমিকম্পে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিখোঁজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৩ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:০৮ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীর নাম গোলাম সাঈদ রিঙ্কু। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার গাবতলী থানার দেনাই গ্রামে। তার বাবার নাম গোলাম রাব্বানি।
আজ মঙ্গলবার গোলাম সাঈদ রিঙ্কুর নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তুরস্কের আঙ্কারার বাংলাদেশ দূতাবাস।
বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, নিখোঁজ গোলাম সাঈদ রিঙ্কু তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কয়েক বছর আগে উচ্চশিক্ষা নিতে তুরস্কে যান তিনি। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ভূমিকম্পের পর তার মোবাইলফোন বন্ধ রয়েছে। তার পরিচিতজনরা কেউ তার খোঁজ পাচ্ছে না। পরে গোলাম সাঈদ রিঙ্কুর পরিবারও বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন। ছেলের নিখোঁজের বিষয়টি দূতাবাসকে জানান বাবা গোলাম রাব্বানি। নিখোঁজ হওয়া গোলাম সাঈদ রিঙ্কুর খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
রিঙ্কুর বাবা গোলাম রাব্বানি বলেন, আমার ছেলে তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতো। সোমবার টেলিভিশনে তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনা দেখে ছেলের মোবাইলফোনে কল দেই। কিন্তু তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তুরস্কে তার পরিচিতজনদের কাছেও কোনো খোঁজ মিলছে না। সবার কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমার ছেলেকে সুস্থ রাখেন।
তুরস্কে ভূমিকম্পে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিখোঁজ : তুরস্ক সরকারের অর্থায়নে দেশটির রাজধানী আঙ্কারার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন বাংলাদেশের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব। তিনি আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটায় ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘ভূমিকম্প পরবর্তী কাহরামানমারাশ প্রদেশ : ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। যেখানে আমার স্বদেশী ভাই গোলাম সাঈদ রিংকু আজও নিখোঁজ। আল্লাহ তাকে সুস্থতার সাথে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।’
এর আগে সোমবার পৃথক এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে নাজমুস সাবিক লেখেন, ‘তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর অনেকেই বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, মেসেজ দিচ্ছেন। সবার মেসেজের রিপ্লাই দেয়া সম্ভব হয়নি, হচ্ছে না। আমার অবস্থান রাজধানী আনকারায়। এখানে আমিসহ অবস্থানরত সব বাংলাদেশি ভাই-বোনেরা নিরাপদে আছেন। আলহামদুলিল্লাহ। ডর্মেটরিতে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে এত এত ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে যে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকা দায়।’
এদিকে, ভূমিকম্পের আঘাত হানার পর তুরস্কের বাংলাদেশের আঙ্কারা দূতাবাস ও ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে হটলাইন চালু করা হয়েছে। এ হটলাইনে জরুরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। তুরস্কে বাংলাদেশের আঙ্কারা দূতাবাস ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রবাসীদের এ দুটি হটলাইনে যোগাযোগ করতে বলেছে- +৯০ ৫৪৬ ৯৯৫ ০৬৪৭ ও +৯০ ৫৩৮ ৯১০ ৯৬৩৫। এছাড়া ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বার্তায় তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। তুরস্কে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জরুরি প্রয়োজনে কনস্যুলেটের হটলাইন নম্বরে (+৯০৮০০২৬১০০২৬) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। সোমবার তুরস্কের স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮।