দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে না আনলে দেশ টিকবে না : হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৯ পিএম, ২৪ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:৩৯ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে দেশ টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে উদ্দেশ্য করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
হাইকোর্ট বলেন, কারাগারে থাকা মানুষদেরও স্বাস্থ্য সেবার অধিকার আছে। সেবাটা দেয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে মন চায় না। এটা শোভনীয় নয়। আমরা অনেক সময় দিয়ে থাকি। বার বার সময় দেয়ার পরও যখনও আদালতের আদেশ মানা হয় না, তখন আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এটা কনসিডার করেন। স্বাস্থ্য খাতের বিষয়টি কোভিডের কারণে হয়েছে। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, সরকার তো কোনো খাতেই টাকা কম দেয় না।
ফরিদপুর মেডিকেলে দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে আদালত বলেন, একটি জিনিসের দাম বাজারের তুলনায় ৪০০ গুণ হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। আমরা নিজেরা দেশ চালাচ্ছি। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, সব জায়গায় ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে ডায়াসের সামনে ডেকে বলেন, এ দেশের মানুষ কিন্তু গরিব। মানুষ বিপদে পড়লেই ডাক্তারের কাছে যায়। এটা একটা মহান পেশা। ডাক্তাররাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়। তাদের ব্যক্তি জীবন আছে বলে মনে হয় না। তারপরও মানুষ সেবা পায় না। আপনি বিষয়টি দেখবেন। গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনো কিছু গেলে আপনারা গুরুত্ব দেবেন।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আদালতে বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এরকম ভুল আর হবে না। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। পরে আদালত এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২ মে দিন ধার্য করেন। এর আগে সকালে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন না করায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে লিখিতভাবে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। গত ১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। অ্যাডভোকেট মো. জে আর খান রবিন ওইদিন বলেছিলেন, কারা কর্তৃপক্ষ আজ প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছেন, কারাগারগুলোতে ৯৩ জন চিকিৎসক নিয়োগ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। ৪৮টি পদ শূন্য রয়েছে। শূন্যপদে নিয়োগের জন্য সময় প্রয়োজন। পরে আদালত ৮ জানুয়ারির মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেন। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৪১টি পদের মধ্যে এই ১১২ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাকি থাকা শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।