দুর্নীতির মামলায় হাজী সেলিমের জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১৬ এএম, ৬ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় দণ্ড পাওয়ায় এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ হাজী মো. সেলিমের হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা লিভ টু আপিল আবেদনের শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
বেঞ্চের অন্য ৪ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন ও বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম।
আবেদনের শুনানির সময় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা হাজী মো. সেলিমের পক্ষে ছিলেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে হাজী সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা সাংবাদিকদের বলেন, আপিল আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। চলতি বছরের শুরুর দিকে হাইকোর্ট তার সাজা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখে।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ২৪শে অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল আবেদন করেন হাজী সেলিম। এরপর ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করে রায় দেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
সে অনুসারে শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে ১০ বছরের দণ্ড বহাল থাকলেও তিন বছরের সাজা থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। একই সঙ্গে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। চলতি বছরের ৯ মার্চ এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায়ে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
এসময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন হাজী সেলিম। আদালতের দণ্ড মাথায় নিয়ে হাজী সেলিম দেশ ছাড়ায় বিভিন্ন মহলে বিষয়টি বিতর্কের জন্ম দেয়।
এরপর গত ৫ মে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন হাজী সেলিম। দেশে ফিরেই লালবাগে তার নির্বাচনী এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন। পরে লালবাগ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন তিনি।
পরে ২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে আত্মসমর্পণ করার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার আবেদন জানান। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। গত ২৪ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় দণ্ডের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদনও করেছিলেন হাজী সেলিম।
গত ৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে ০১ আগস্ট দিন ধার্য করেন। গত ১ আগস্ট জামিন আবেদন নথিভুক্ত রেখে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) শুনানির জন্য ২৩ অক্টোবর দিন রাখেন আপিল বিভাগ। কিন্তু আবেদনটি কার্যতালিকার নিচের দিকে থাকায় আর শুনানি হয়নি।