ক্ষমা চেয়ে ফখরুলের পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রয়োজন ছিল : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:২৫ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
লজ্জা-শরম না থাকায় ফরিদপুরের সমাবেশ শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চুপিসারে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এসেছেন- এমন মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, লজ্জা থাকলে পদ্মা সেতু নিয়ে অপপ্রচার চালানোর কারণে তাদের জাতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রয়োজন ছিল। বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে আজ সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। ফরিদপুরের সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় ফেরার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের লজ্জা আসলে নাই। অবশ্য পদ্মা সেতু সবার জন্য বানানো হয়েছে।
লজ্জা যদি থাকতো পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে তাদের বলা উচিত ছিল- পদ্মা সেতু নিয়ে আমরা যে অপপ্রচার করেছি তার জন্য জাতির কাছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। ক্ষমা চেয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠা প্রয়োজন ছিল। লজ্জা-শরম নাই সে জন্য চুপিসারে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এসেছে। তবে পদ্মা সেতু সবার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার নির্মাণ করেছে, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কত কথা। সোনার মূল্য দিয়ে পণ্যের মূল্য বিবেচনায় নিলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বানাতে যে খরচ হয়েছিল সে সময়, তার অনুপাতে পাঁচ ভাগের এক ভাগ হয়েছে পদ্মা সেতুতে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি আজ প্রায় ১৪ বছর ধরে বলে আসছ সরকারের পতন ঘটাবে এবং পতন না ঘটলে তারা ঘরে ফিরে যাবে না। অবশ্য প্রত্যেকটা সমাবেশের পর তারা ঘরেই ফিরে যায়। তারা যতই দাবি করছে, এতে একটা লাভ হচ্ছে আমাদের, আমাদের কর্মীরা চাঙ্গা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কর্মীদের একটা গুণ হচ্ছে কেউ যদি খোঁচা দেয় তখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে উজ্জীবিত হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির এই আন্দোলন-আন্দোলন ভাবের কারণে আমাদের কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে। সেটিরই বহিঃপ্রকাশ আপনারা দেখেছেন, যুবলীগের যে সমাবেশ হয়েছে সেখানে লাখ লাখ যুবকের সমাবেশ হয়েছে। তাদের মতো এত হাঁকডাক তারা দেয়নি। এটা যুবলীগের সমাবেশ, আওয়ামী লীগের নিজের সমাবেশ না। বিএনপির আন্দোলনের কারণে আমাদের কর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছে, চাঙ্গা হচ্ছে এবং অপশক্তির সঙ্গে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বর্তমান সরকার মেগাপ্রকল্প থেকে বিধবাভাতা পর্যন্ত সব লুটপাট করে খেয়ে নিচ্ছে। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ওনারা পরপর পাঁচবার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছেন। চারবার এককভাবে, আরেকবার যৌথভাবে। যারা চোর, বিশ্বচোর তারা সবকিছুতেই চুরির গন্ধ খোঁজে। নিজেরা বিশ্বচোর তো সেজন্য সবকিছুতে চুরির গন্ধ খোঁজে।
তিনি বলেন, যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন হাওয়া ভবন বানিয়ে সব ব্যবসার মধ্যে চাঁদাবাজি করেছে। মির্জা ফখরুল একটি কথা বলেছেন এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মির্জা ফখরুল সাহেব কয়েকদিন আগে বলেছেন সরকারের পতন হলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় সরকার হবে। অর্থাৎ হাওয়া ভবনের বিশ্বচোর আবার বাংলাদেশে আসবে এবং ওনার নেতৃত্বে ওনারা জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়। দেশের মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না।
বিএনপির সমাবেশের আগে লঞ্চ, বাস, ট্রাক ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, কারণ বিএনপি লঞ্চ, বাস, ট্রাক সবকিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়েছিল। যখন বিএনপির সমাবেশ করে তখন লঞ্চ, বাস, ট্রাকের মালিকরা আতঙ্কে ধর্মঘট করে। কারণ তারা অতীতে সমাবেশের নামে, আন্দোলনের নামে বাস-ট্রাক পুড়িয়েছে। বাস-ট্রাকের মানুষ পুড়িয়েছে, যাদের নিয়ে আমরা একটা অনুষ্ঠান করেছি। সেখানে মানুষের যা আহাজারি, কান্না, এই কান্নার জন্য দায়ী বিএনপি। তারা সবাই বিএনপির বিচার দাবি করেছে।
তিনি বলেন, বাস-ট্রাক মালিক শ্রমিক সমিতিতে সব দল আছে। ওখানে শুধু আওয়ামী লীগের নেতার আছে তা নয়। ওখানে আওয়ামী লীগ আছে, বিএনপি আছে, জাতীয় পার্টি আছে, জাসদ থেকে শুরু করে অন্যান্য দল সেখানে আছে। তারাই তো ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। জিয়ার কবর সরানো নিয়ে ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের করা দাবির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি মায়ের কান্নার দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। যেভাবে জিয়াউর রহমান হাজার হাজার সেনাবাহিনী অফিসারকে বিনাবিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে, আজ সারাদেশে তাদের পরিবারের সদস্যরা ডুকরে কাঁদছে। তাদের কান্নার আওয়াজও করার সুযোগ করে দেয়া হয়নি অতীতে। তাদের দাবি যৌক্তিক। এ দাবির প্রতি আমার সহমর্মিতা আছে।