দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকাতেই উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৩ পিএম, ১০ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১১ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
আওয়ামী লীগ সরকার টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২০১৪ তে এবং ২০১৮ তে জয়ী হয়ে এই একটানা আজকে ১৪ বছর থাকাতে, দীর্ঘ সময়টা থাকাতে- আজকে অন্তত বাংলাদেশের উন্নয়নটা আমরা করতে পারছি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শীতার্ত মানুষের সহায়তায় কম্বল ও শীতবস্ত্র প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডারে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য- যে স্বপ্ন নিয়ে, যে আদর্শ নিয়ে, যে লক্ষ্য নিয়ে তিনি (বঙ্গবন্ধু) এই দেশটা স্বাধীন করেছিলেন, সেটা আমরা অর্জন করব। আজকে অন্তত এইটুকু বলতে পারি যে, এই দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে এবং আমি ধন্যবাদ জানাই যে, প্রত্যেক নির্বাচনের আগেও আমি সকল ব্যবসায়ী মহলের সমর্থন পেয়েছি। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক এক অনুষ্ঠানে কথোপকথনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি, রেহানা, প্রাইম মিনিস্টার মাহাথির ও তার স্ত্রী আমরা বসে এক কোণায় গল্প করছি। উনি (মাহাথির) বললেন যে, আসলে দেশের একটা উন্নতি করতে হলে একটু দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় না থাকলে উন্নতিটা ঠিক মত হয় না, করা যায় না। এই কথাটা কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বললাম, দেখেন জনগণ কতক্ষণ ভোট দেবে- না দেবে, সেটা তো বলতে পারি না। যদি ভোট পাই- হয়ত থাকব। কারণ আমাদের দেশে তো পরিবেশটা অন্য রকম। দীর্ঘদিন মিলিটারি ডিক্টেটর, কখনও ডাইরেক্টলি, কখনও ইনডাইরেক্টলি তারা ক্ষমতা দখল করে; আবার উর্দি খুলে রাজনীতিবিদ হয়। আর হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র- এটা তো আমাদের দেশে লেগেই আছে। আমাদের তো ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা থাকে না এই দেশে। যার জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশও কখনও আসেনি। যেজন্য সার্বিক উন্নতিটা ঠিক হয়নি। কাজেই যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের বর্তমান সম্মান যাতে অব্যাহত থাকে সেই প্রত্যাশা রেখে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা বাংলাদেশটাকে একটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে এসেছি, এটা ধরেই যেন এগিয়ে যেতে পারি।
তিনি বলেন, তার শুভ ফলটা তো আমরা পাচ্ছি এখন। যাই হোক, যতটুকু অর্জন- আমি মনে করি, এটা আপনাদের সকলেরই অবদান। বাংলাদেশের জনগণের অবদান। আমি তাদেরকেই ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, তবে অনেক দিন তো হয়ে গেল। মানুষকে তো এক সময় বিদায় নিতেই হবে- এটা তো আল্লাহই বলে দিয়েছেন; সেটাও আল্লাহর ইচ্ছা যেদিন যেতে হয় চলে যাব। মানে এখান থেকেও এই চেয়ার থেকেও চলে যাব, আবার জীবন থেকেও চলে যাব। যেতেই হবে, এটা হলো বাস্তবতা; যেদিন যাবার সময় হবে। আর সময় না হলে ততদিন তো কাজ করতেই হবে। আল্লাহ যতক্ষণ সুযোগ দিয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যাকান্ডটা তো শুধু হত্যাকান্ড না। আপনারা একবার চিন্তা করেন তো, ১০ বছরের একটা শিশুর কী অপরাধ ছিল? তাকেও শেষ করেছে। কেন? ওই রক্তের কেউ যেন এই দেশে আর ক্ষমতায় আসতে না পারে; এটাই তো ছিল।
জাতির পিতাকে হত্যার সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান তার দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। পরে ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দলের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে সরকারপ্রধান জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে তার বিদেশ সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল এবং সফর শেষে মেয়েদের দেশে ফিরিয়ে আনার কথাও ছিল। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। খেলাধুলায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই খেলাধুলার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, আমাদের সকলের বিশেষ করে আপনাদের একটু সহযোগিতা বেশি করা উচিত। খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা যদি সকলে উৎসাহিত না করি, তাহলে এই ছেলে মেয়েগুলো তাদের ভবিষ্যৎ কী? তারা যত বেশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে থাকবে; তত বেশি এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে দূরে থাকতে পারবে এবং তারা ভালোভাবে... দেশেরও উন্নতি হবে। এটা হল বাস্তবতা। শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের রয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।