পৃথিবীর বাস্তবতায় আমরা এখনো অনেক ভালো আছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৮ পিএম, ১০ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪৭ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা কঠিন সময় পার করছি। জ্বালানি মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে। এটা সারা পৃথিবীর বাস্তবতা। শিল্পখাতে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্যাস আমদানি করতে হয়। পৃথিবীর বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখনো ভালো অবস্থানে আছে। যদিও অনেক সময় অনেক কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেয়া যাচ্ছে না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের যুগপূর্তি উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) মাহবুবুর রহমান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ইন্ডাস্ট্রির পর ইন্ডাস্ট্রি আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার দৃশ্য আমরা দেখেছি। মালিকদের কেউ কেউ যখন শ্রমিকদের বেতন দিতে পারতেন না তখন বিক্ষোভ, ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও হতো। সে অবস্থা এখন বদলেছে। ব্যবসায়ী নেতাদের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী শিল্প পুলিশ গঠন করেন। ১৫ বছর আগের পুলিশ ও বর্তমান পুলিশ একদম আলাদা। বর্তমান পুলিশ দক্ষ বিচক্ষণ। তাদের হাতেই শিল্প পুলিশের নিয়ন্ত্রণ। আমাদের গার্মেন্টসের মা-বোনেরা রাতে গার্মেন্টস থেকে বের হলে তার বেতনের টাকা ছিনতাই হতো। এখন শিল্প পুলিশ সেখানে সেতুবন্ধনের ন্যায় কাজ করছে। শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা, দেনাপাওনা নিশ্চিত করছেন। শিল্পখাতে শ্রমিকদের দ্বারা কি হতে পারে, মালিকরা কী করেন পুলিশ সেটা জানে। পুলিশ শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া ও অধিকার আদায়ে মালিকপক্ষে সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। শিল্প পুলিশকে বলবো, সবার সমস্যা শুনুন। শ্রমিকদের, মালিকদেরও। বেসরকারি শিল্পখাতে অগ্রগতি উন্নতি ঘটছে। শিল্প পুলিশ কাজ করছে বলেই আজ শিল্প খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। ঢাকায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গঠন করার ইচ্ছে নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় আর লোক সংখ্যা বাড়ানো যাবে না। আমরা নিরুৎসাহিত করছি ঢাকায় শিল্প গড়া। বরং ঢাকা থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান সরানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে আমি স্মরণ রাখবো ঢাকায় ডিএমপির কয়েকজন কর্মকর্তা রেখে শিল্পকারখানার শৃঙ্খলায় নজরদারি রাখা যায় কি না।
তিনি বলেন, মালিক শ্রমিক সবাই বাস্তবতার সব কিছুই জানেন। তবে বাংলাদেশের এখনো সেই অবস্থায় যায়নি, যা আতঙ্কিত করার মতো। পৃথিবীর ১০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন হয় রাশিয়া-ইউক্রেনে। সেখানে যুদ্ধ চলছে। এলএনজি দিয়ে গ্যাসের অভাব পূরণের চেষ্টা করছি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে শিল্পখাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন তা অভাবনীয়। আমিও ১০ বছর আগে বিশ্বাস করতাম না শিল্পখাত তথা অর্থনীতি এতোটা শক্তিশালী হতে পারে। শিল্পখাতে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন তিনি অনেক কিছু সহজ করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটাই উদ্দেশ্য নিয়ে বলতেন শিল্পখাতকে এগিয়ে নিতে হবে। শিল্পখাতের নিরাপত্তার জন্যই শিল্প পুলিশের গঠন করা। শ্রমিকের চেয়ে বেশি কাজ করছে শিল্প পুলিশ। কখন কোথায়, কী ঘটতে পারে সেটা বিবেচনায় নিয়ে প্রোঅ্যাকটিভলি কাজ করছে তারা। তাই হয়তো শ্রমিকরাও এখন শিল্প পুলিশের প্রশংসা করেন। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সরকার যে ডেল্টা পরিকল্পনা করেছে তা বাস্তবায়ন করতে হলে শিল্পখাতের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশের শিল্পখাতের উন্নতি অগ্রগতি রুখে দিতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়। সেসব রুখে দিতে হবে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর কুতুব আলম মান্নান, নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।