সমাবেশ-মিছিল নিষিদ্ধ করার বিধান কেন বেআইনি নয় : হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২৫ এএম, ৩০ অক্টোবর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সমাবেশ-মিছিল নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা-সংক্রান্ত ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) অধ্যাদেশের ২৯ ধারা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ রবিবার (৩০ অক্টোবর) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন।
অধ্যাদেশটির ২৯ ধারায় সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার ক্ষমতার (পুলিশ কমিশনারের) বিষয়ে বলা আছে।
১৯৭৬ সালের এই অধ্যাদেশের ২৯ ও ১০৫ ধারা এবং ২০০৬ সালের ঢাকা মহানগর পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী ও কে এম জাবির, চাঁদপুর জেলা বারের (সমিতি) আইনজীবী সেলিম আকবর, রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নূরুজ্জামান ও মোহাম্মদ ইয়াসিন ২০ অক্টোবর রিটটি করেন।
গত বৃহস্পতিবার রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য আজকের (রোববার) দিন রাখেন। সে অনুযায়ী, আজ আদেশ হলো।
আদেশে আদালত বলেন, ‘এখন ১০৫ ধারার প্রশ্নে আমার রুল ইস্যু করছি না। ২৯ ধারার বিষয়ে রুল দেওয়া হলো।’
পরে আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, আইনসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনারকে রুলের জবাব দিতে হবে।
শুনানিতে আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেছিলেন, সভা-সমাবেশ করতে বোম্বে পুলিশ রেগুলেশনে অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, যা ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বিধান রয়েছে। এতে কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে, কাউকে হবে না। অধ্যাদেশের ২৯ ধারা সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি মৌলিক অধিকারেরও বিরোধী।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানিতে বলেছিলেন, ‘সংবিধানে ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে সভা-সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে তা জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইন দিয়ে আরোপিত যুক্তিসংগত বাধানিষেধ সাপেক্ষে। এটি নিরঙ্কুশ নয়। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা, জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। তাহলে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অর্থাৎ পুলিশের। অধ্যাদেশের ২৯ ধারাটি হচ্ছে, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। জনশৃঙ্খলার স্বার্থে ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ঢাকার বাইরে ১৪৪ ধারা দেওয়া হয়। অধ্যাদেশের ১০৫ ধারা হলো দায়মুক্তির বিধান, যা প্রত্যেক আইনেই আছে। রিটটি সরাসরি খারিজযোগ্য।’