আরপিও সংশোধন প্রস্তাবে সাড়া নেই, মন্ত্রণালয়কে আবার ইসির চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৮ পিএম, ১০ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৪২ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আইন ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও)’ কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু দুই মাসেও এ বিষয়ে ইসিকে কিছু জানায়নি আইন মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চেয়ে দেয়া চিঠিরও কোনো জবাব পায়নি ইসি। এই অবস্থায় আরপিওর সংশোধনী প্রস্তাবের অগ্রগতি জানতে চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে দ্বিতীয় দফায় আরেকটি চিঠি দিয়েছে কমিশন।
আজ সোমবার নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) এস এম আসাদুজ্জামানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি জানানো হয়। ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর কিছু সংশোধন, সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আরপিও সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিল প্রস্তুত করে গত ৮ আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গত ৪ অক্টোবর ইভিএম সংক্রান্ত অনুচ্ছেদে বাস্তবতার নিরিখে কিছু সংশোধনী আনার জন্য খসড়া প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
ইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বিলের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না নেয়া বা অগ্রগতি সম্পর্কে ইসিকে না জানানোয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগকে জরুরি চিঠি দেয় ইসি। তাতে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। তারপরও এখন পর্যন্ত ওই খসড়া বিলের অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করা হয়নি। বিষয়টি জরুরি বিধায় সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিলের অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্য আবারও চিঠি দেয়া হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, বিদ্যমান আরপিওতে যেসব সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভোট বাতিলে ইসির ক্ষমতা ও ভোট বন্ধে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ক্ষমতা বাড়ানো, প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখালে বা কেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে শাস্তির বিধান, সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে শাস্তি, দলের সর্বস্তরের কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব রাখতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় দেয়া, দায়িত্বে অবহেলায় কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতা বাড়ানো, প্রার্থীদের আয়কর সনদ জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা, ভোট গণনার বিবরণী প্রার্থী ও তার এজেন্টদের দেয়া বাধ্যতামূলক করা, মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত খেলাপি বিল (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি) পরিশোধের সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র ৩০ দিনের মধ্যে ইসিতে জমা দেয়ার বিধান করার প্রস্তাব ইত্যাদি। গত আগস্টে এসব প্রস্তাব পাঠানো হয়। এরপর গত ৪ অক্টোবর ইভিএম সংক্রান্ত একটি সংশোধনী প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, ভোটারের আঙুলের ছাপ না মিললে একজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোট ভোটারের সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেয়ার অনুমতি (কর্মকর্তার আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে) দিতে পারবেন। ইসির এসব প্রস্তাব আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে জাতীয় সংসদে এগুলো পাস হতে হবে। এর আগে ইসির প্রস্তাবগুলো প্রথমে খতিয়ে দেখবে আইন মন্ত্রণালয়। এরপর তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেতে হবে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর তা জাতীয় সংসদে তোলা হয়।