ইভিএমে আঙুলের ছাপে ভোগান্তি : আরপিও সংশোধন করছে ইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৭ পিএম, ৩ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:২২ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদানে ভোটারের আঙুলের ছাপ না মেলা এক শতাংশ ভোটারের ভোটদানের সুযোগের বিধানটি আইনের কাঠামোয় আসছে। এ লক্ষ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) প্রয়োজনীয় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দু-একদিনের মধ্যে এই সংশোধনী প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
আজ সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশনার মো. আলমগীর এ তথ্য জানান। তিনি জানান, নানা রকম অপব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টির কারণে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে এই সুযোগটি ভোটাররা পাচ্ছেন উল্লেখ করে এই কমিশনার আরও জানান, যাদের হাতের আঙুলের ছাপ মেলে না তাদের তো ভোট দেয়ার অধিকার রয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার পরীক্ষা- নিরীক্ষা করে ভোটার নিশ্চিত হলে ভোট দেয়ার সুযোগ দেন। এখানে প্রিসাইডিং অফিসার শুধু ভোট দেয়ার অনুমতি দেন। ওই ভোটার গোপন কক্ষে গিয়ে নিজের ভোট নিজেই প্রদান করেন। এটার একটা সীমা আছে। ওই ভোটকেন্দ্রের সর্বোচ্চ এক শতাংশ ভোটারের ক্ষেত্রে এই সুবিধাটা দেয়ার সুযোগ প্রিসাইডিং অফিসারের আছে। এ বিষয়টি আলাদা রেকর্ড রাখা হয়।
আইনি কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির যুক্তি তুলে ধরে মো. আলমগীর বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে যাতে কনফিউশন না হয়, সে কারণে আইনের কাঠামোতে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি আইনি কাঠামোতে আনার জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেবো।’ বিষয়টি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিওতে) যুক্ত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
দু-একদিনের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের একটি সংশোধনী আগেই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তার সঙ্গে নতুন এই অংশটুকু যুক্ত হবে। আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এক শতাংশ ভোট দেয়ার রেকর্ড রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বিধিমালায় ও প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রিসাইডিং অফিসারের ক্ষমতা এক শতাংশ থাকে। ইভিএম মেশিন সেভাবেই কাস্টমাইজ করা হয়। তিনি চাইলে তারচেয়ে বেশি দিতে পারেন না।
এ প্রসঙ্গে মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘আমরা ভোটারদের বর্তমানের চার আঙুলের ছাপের পরিবর্তে ১০ আঙুলের ছাপ নিতে যাচ্ছি। আমরা যাদের স্মার্টকার্ড দিয়েছি, তাদের সবারই ১০ আঙুলে হিসাব নেয়া হয়েছে। এত করে পাঁচ কোটি ভোটারের ১০ আঙুলের ছাপ ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। বাকি যারা স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করবেন, তাদেরও ১০ আঙুলের ছাপ নেয়া হবে। এছাড়া স্মার্টকার্ড দিতে পারি বা না পারি, আমরা সবারই ১০ আঙুলের ছাপ নেবো। আমাদের লক্ষ্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই যাতে সবার ১০ আঙুলের ছাপ নিতে পারি। তখন এই সমস্যাটা আর থাকবে না। কারণ এই ১০ আঙুলের কোনো না কোনো আঙুলের মাধ্যমেই আমরা ভোটার চিহ্নিত করতে পারবে।
এক শতাংশের বেশির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার কথা তুলে ধরে আলমগীর বলেন, ‘এক শতাংশের বেশি হলে সেখানকার প্রিসাইডিং অফিসার রিটার্নিং অফিসারকে জানাবেন। এক্ষেত্রে কোন কোন ভোটার ভোট দিতে পারছে না তা জানাবেন। রিটার্নিং অফিসার তা যাচাই করে সন্তুষ্ট হলে তিনি কমিশনকে জানান এবং কমিশন সেটা ভেরিফাই করে সন্তুষ্ট হলে ওই নির্দিষ্ট ভোটারের জন্য আলাদা কোড দিয়ে ভোট প্রদানের সুযোগ দিয়ে থাকেন। এটা করতে হলে বিশেষ ব্যবস্থা করতে হয়। এক শতাংশের বিষয়টি আইনি কাঠামোতে আসলে এই বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে না। এক্ষেত্রে এক শতাংশের বেশি হলে তারা ভোট দিতে পারবে না। এরকম ক্ষেত্রে কোনো ভোটারের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থে এটা করা হচ্ছে। বেশিরভাগ যেহেতু এটাকে সন্দেহের মধ্যে রাখেন এবং রাজনৈতিক দল এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, যার কারণে বৃহত্তর স্বার্থে আমরা এটা করতে যাচ্ছি। তিনি জানান, ১০ আঙুলের ছাপ নিলে এক পার্সেন্টেরও প্রয়োজন হবে না। তারপরও শেষ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা এটা রাখছি।