বিলাসিতা নয়, আদর্শ ধারণ করাই প্রকৃত জীবন : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩৬ পিএম, ৮ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৪৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
শুধু বিলাসিতা আর পাওয়াই জীবন নয়, আদর্শ ধারণ করাই প্রকৃত জীবন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মতো ত্যাগের আদর্শ ধারণ করতে নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।
আজ সোমবার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে পদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের এই অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পদক তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। নিজের মায়ের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা ছিলেন বাবার ছায়াসঙ্গী। বাবার আদর্শ তিনি ধারণ করেছিলেন। প্রতিটি কাজে বাবাকে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে নিজের পড়াশোনাটাও ঠিকমতো করতে পারেননি।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে বাবার পাশে ছিলেন মা। তিনি সংসারটা করতেন গুছিয়ে। প্রতিটি কাজে নিয়ম মেনে চলতেন। কোনো সময় তার মধ্যে হতাশা দেখিনি। কোনো জিনিস ফুরিয়ে গেলে তিনি নাই বলতেন না। বলতেন, আনতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, বাবা টাকা এনে মায়ের হাতে তুলে দিতেন। মা এই টাকা সংসারের জন্য খরচ করতেন। নেতাকর্মীদের জন্য বিনা দ্বিধায় খরচ করতেন। অনেক সময় নিজের গহনা বিক্রি করেও নেতাকর্মীদের জন্য টাকা দিয়েছেন। কোনো জিনিসের প্রতি তার এমন কোনো আকাক্সক্ষা ছিল না যে, এটা আমার চাই।
স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বাবা বারবার কারাগারে যেতেন। কারাগারে দেখতে গেলে বাবা জিজ্ঞেস করতেন, সংসার কীভাবে চালাচ্ছো। মা বলতেন, এটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। এটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। কখনও বাবাকে সংসারের ব্যাপারে চিন্তাই করতে দেননি। বলতেন, আমি সব দেখবো, তোমার এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। যেহেতু বাবা রাজনীতি করেন, তিনি জানতেন দেশের মানুষের অধিকার নিয়ে বাবা কাজ করছেন। এজন্য তাকে ফ্রি করে দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মা সংসারের সবকিছু অত্যন্ত ঠিকঠাক মতো চালাতেন। মাসিক বাজার কী হবে সব হিসাব রাখতেন। আমি যখন বাবার হাতের লেখা খাতা সংগ্রহ করি, মায়ের লেখা একটি খাতাও আমার কাছে আসে। সেখানে বাজারের খরচ, টিউটরের বেতন, কাজের লোকের বেতন, সবকিছু লেখা ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও মায়ের পরামর্শ বাবার ওপর ভূমিকা রেখেছে। ছয় দফা থেকে আট দফা হয়ে গেলে কিন্তু আন্দোলন সফল হতো না। এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা আছে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের মতো একজন আদর্শ সহধর্মিণী পাওয়া বঙ্গবন্ধুর সৌভাগ্য ছিল বলেও মন্তব্য করেন তার কন্যা।