হাজি সেলিমের জামিনের বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ২৩ অক্টোবর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ১ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০৭ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিমের জামিন চেয়ে করা আপিল আবেদনটি নথিভুক্ত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্যে আগামী ২৩ অক্টোবর দিন ঠিক করেছেন। হাজি সেলিমের জামিন চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমে রাজা। তার সঙ্গে ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলাল। আর দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে আপিল আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) ৬ নম্বর ক্রমিকে ছিল। ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লালবাগ থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদন্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজি সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে ১০ বছরের দন্ড বহাল থাকলেও তিন বছরের সাজা থেকে খালাস পান তিনি। একই সঙ্গে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। গত ৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজি সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদন্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। দুই বিচারপতির সইয়ের পর ৬৮ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এ সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
তবে গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন হাজি সেলিম। আদালতের দন্ড মাথায় নিয়ে হাজি সেলিম দেশ ছাড়ায় শুরু হয় বিতর্ক। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, হাজি সেলিম জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন। আইন মেনেই বিদেশে গেছেন এবং আইন মেনেই আবার চলে এসেছেন। এরপর গত ৫ মে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন হাজি সেলিম। দেশে ফিরেই লালবাগে তার নির্বাচনি এলাকার শাহানি বেগম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন। পরে লালবাগ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন। গত ২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে আত্মসমর্পণ করার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার আবেদন জানান। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। পরে গত ২৪ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেছিলেন হাজি সেলিম। গত ৬ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত নিয়মিত বেঞ্চে ১ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।