২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট, বাংলাদেশ ১০৪তম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৩০ পিএম, ২০ জুলাই,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২৮ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
২০২২ সালে একজন এশিয়ান পাসপোর্টধারী অন্য যেকোনো দেশের পাসপোর্ট ধারণকারীর তুলনায় বেশি বিশ্ব ভ্রমণের স্বাধীনতা পেয়েছেন। একথা জানিয়েছে লন্ডন-ভিত্তিক বৈশ্বিক নাগরিকত্ব এবং আবাসিক উপদেষ্টা সংস্থা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স। এক্ষেত্রে প্রথমেই রয়েছে জাপানের নাম। নতুন প্রকাশিত এ সূচকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট চার ধাপ এগিয়েছে। ২০২১ সালে বিশ্ব সূচকে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান ছিল ১০৮তম। নাগরিকরা ভিসা ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পেতেন ৪০টি দেশে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৪ তম। বর্তমানে ৪১টি দেশে ভিসা ফ্রি ভ্রমণের সুবিধা পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। জাপান তার নাগরিকদের ভিসা-অন-ডিমান্ড অ্যাক্সেস দেয়ার ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর এবং দক্ষিণ কোরিয়াকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিশ্বজুড়ে ১৯৩টি গন্তব্যে প্রবেশের ছাড়পত্র দিচ্ছে তারা। যেখানে বাকি দুটি দেশ ১৯২টি গন্তব্যে যাবার সুযোগ দিচ্ছে।
যাইহোক, কোভিড-১৯-এর প্রতি এশিয়ার আরও সতর্ক প্রতিক্রিয়ার অর্থ হলো- ইউরোপ বা আমেরিকার মানুষের তুলনায় এই মহাদেশের নাগরিকরা কম ভ্রমণের স্বাধীনতা পাবেন। ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (ওঅঞঅ) এর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিমান ভ্রমণের জন্য আন্তর্জাতিক যাত্রীর চাহিদা এখনও প্রাক-কোভিড স্তরের এক-পঞ্চমাংশেরও কম।
হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স রিপোর্ট বলছে, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বাজারগুলো তাদের আগের ভ্রমণ গতিশীলতার মাত্রার প্রায় ৬০% পুনরুদ্ধার করেছে। এশিয়ান শীর্ষ তিন দেশের একেবারে ঘাড়ে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে ইউরোপীয় দেশগুলো। জার্মানি এবং স্পেন ১৯০টি গন্তব্যে এবং ফিনল্যান্ড, ইতালি, লাক্সেমবার্গ ১৮৯টি গন্তব্যে যাবার সুযোগ দিচ্ছে। তারপরে অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস এবং সুইডেন রয়েছে পঞ্চম স্থানে, যেখানে ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল এবং যুক্তরাজ্য রয়েছে ৬ নম্বরে। এরপর রয়েছে বেলজিয়াম, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ড।
আফগান নাগরিকরা আবারও সূচকের নিচের দিকে রয়েছে এবং আগাম ভিসার প্রয়োজন ছাড়াই মাত্র ২৭টি দেশে প্রবেশ করতে পারবে। যাইহোক, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো সহজ হওয়ায়, নিম্ন-র্যাংকের পাসপোর্টগুলো তাদের প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে শুরু করেছে। ভারতীয় পাসপোর্টধারীদের এখন একই রকম ভ্রমণ স্বাধীনতা রয়েছে যা তারা প্রাক-মহামারির সময়ে উপভোগ করেছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৫৭টি গন্তব্যে সীমাহীন অ্যাক্সেস করতে পারবেন ভারতীয়রা। ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাশিয়ান পাসপোর্ট বর্তমানে সূচকে ৫০ তম স্থানে রয়েছে, বাস্তবতা হলো রাশিয়ান নাগরিকদের কার্যকরভাবে অনেক গন্তব্যে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়েছে।
২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত সেরা পাসপোর্টগুলো হল-
১. জাপান (১৯৩ গন্তব্য)
২. সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া (১৯২ গন্তব্য)
৩. জার্মানি, স্পেন (১৯০ গন্তব্য)
৪. ফিনল্যান্ড, ইতালি, লুক্সেমবার্গ (১৮৯ গন্তব্য)
৫. অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন (১৮৮ গন্তব্য)
৬. ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য (১৮৭ গন্তব্য)
৭. বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৮৬ গন্তব্য)
৮. অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, গ্রীস, মাল্টা (১৮৫ গন্তব্য)
৯. হাঙ্গেরি (১৮৩ গন্তব্য)
১০. লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া (১৮২ গন্তব্য)
২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ পাসপোর্ট
১. উত্তর কোরিয়া (৪০ গন্তব্য)
২. নেপাল, ফিলিস্তিনি অঞ্চল (৩৮ গন্তব্য)
৩. সোমালিয়া (৩৫ গন্তব্য)
৪. ইয়েমেন (৩৪ গন্তব্য)
৫. পাকিস্তান (৩২ গন্তব্য)
৬. সিরিয়া (৩০ গন্তব্য)
৭. ইরাক (২৯ গন্তব্য)
৮. আফগানিস্তান (২৭ গন্তব্য)
অন্যান্য সূচক : হেনলি অ্যান্ড পার্টনারের তালিকা হল আর্থিক সংস্থাগুলোর দ্বারা তৈরি করা বেশ কয়েকটি সূচকের মধ্যে একটি যা তারা তাদের নাগরিকদের দেয়া অ্যাক্সেস অনুসারে বিশ্বব্যাপী পাসপোর্টগুলোকে র্যাঙ্ক করে। আর্টন ক্যাপিটালের পাসপোর্ট সূচক ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য দেশ এবং ছয়টি অঞ্চল- তাইওয়ান, ম্যাকাও, হংকং, কসোভো, ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং ভ্যাটিকান-এর পাসপোর্ট বিবেচনা করে। এর ২০২২ এর সূচকে শীর্ষস্থানে সংযুক্ত আরব আমিরাত রয়েছে, ভিসা-অন-অ্যারাইভাল স্কোর ১৭১ । সূত্র : সিএনএন