অর্থবিল পাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৯ জুন,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০০ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই জাতীয় সংসদে অর্থবিল-২০২২ পাস হয়েছে বুধবার। একইভাবে ৩০ জুন সংসদে পাস হবে মূল বাজেট, যা পরদিন ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। তবে এবারের অর্থবিলে ছোটখাটো দু-একটি ইস্যু ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। ৯ জুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় যে অর্থবিল উপস্থাপন করা হয়েছে তা বুধবার পাস হয় সংসদে। এবারের অর্থবিলে আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপি’র আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট জিডিপি’র আকার ধরা হয়েছিল ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। এদিকে চরম এক বৈরী প্রেক্ষাপটে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে মোট ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এর পর থেকে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা হচ্ছে। এতে সরকারি ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এবারই প্রথম জাতীয় বাজেটে বক্তৃতায় পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে স্থানীয় বিনিয়োগ বাড়বে এবং ডলারের বাজারে চাপ কিছুটা কমবে বলে মনে করে সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে করপোরেট করহার কমানো এবং বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান, দেশি শিল্পের বিকাশ ও কৃষিজ উৎপাদনকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় সংসদে এ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। গত এক মাসে অবশ্য ডলারের সংকট তেমন একটা কমেনি। বরং ডলারের বিপরীতে টাকার মান দফায় দফায় কমানো হয়েছে। এর পরও নিয়ন্ত্রণে আসছে না ডলারের বাজার।
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ জন্য বিদ্যমান চাহিদার প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সরবরাহ বাড়ানোর কৌশল নেয়ার কথা জানানো হয়েছে। আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার কথা জানান তিনি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ও বিশ্বব্যাপী সরবরাহ-শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রেক্ষাপটে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এতে ১ কোটি পরিবার টিসিবি’র ‘ফ্যামিলি কার্ড’ সহায়তা পাবে, যার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরুও হয়েছে। অন্যদিকে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী, যা বাজেটের ১৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। করোনার অভিঘাত মোকাবিলা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরও ৫ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী অর্থবিল পাসের পরদিন সংসদে নির্দিষ্টকরণ বিল কন্ঠভোটে পাসের জন্য দেয়া হবে। কন্ঠভোটে এ বিল পাসের মাধ্যমেই পাস হবে নতুন বাজেট।