ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩১ পিএম, ২৫ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪১ এএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
চাঁদাবাজি, ক্রসফায়ারের হুমকি ও মারধরের অভিযোগে বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন একজন ব্যবসায়ী। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার সারিয়াকান্দি থানার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলাটি করেন আ.ক.ম হানযালা নামের সারিয়াকান্দির এক কাপড় ব্যবসায়ী।
মামলার আসামিরা হলেন- সারিয়াকান্দি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, এসআই মো. রবিউল করিম, মো. মাহবুব হাসান ও মো. রবিউল ইসলাম। এসআই রবিউল ইসলাম বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা থানায় কর্মরত আছেন।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে আদালতে জমা দেওয়ার দিতে বলা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, হানযালার সাবেক স্ত্রী শাকিলা আক্তারের সঙ্গে এসআই রবিউল ইসলামের প্রেম ছিল। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি রাতে আপত্তিকর অবস্থায় রবিউল ও শাকিলাকে গ্রামবাসী আটক করেন। ওই সময় গ্রামবাসীর হামলার শিকার হন রবিউল।
রবিউল স্থানীয় বাসিন্দাদের হামলার শিকার হওয়ার পর ধারণা করেন যে হানযালাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। এ ধারণা থেকে হানযালাকে বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে আসছিলেন অভিযুক্ত রবিউল। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় সহকর্মীকে সহায়তা দিতে অন্য পুলিশ কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়েন।
হানযালা ২১ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সারিয়াকান্দিতে গোল্ডেন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে বসে নাস্তা করছিলেন। ওই সময় সারিয়াকান্দি থানার এসআই রবিউল করিম ও এসআই মাহবুব এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। থানায় নেওয়ার পর ওসি তাকে বলেন, ৩ লাখ টাকা না দেওয়ায় তাকে থানায় ধরে আনা হয়েছে। এ সময় প্রতিবাদ করলে এসআই রবিউল করিম ও এসআই মাহবুব ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে থানা হাজতে আটকে রাখেন।
ভুক্তভোগী হানযালা বলেন, মধ্যরাতে তাকে হাজত থেকে বের করে চোখ বেধে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারপিট করা হয়। ওই সময় ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মারপিটের কথা প্রকাশ করলে তাকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরের দিন ২৬ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরে হানযালা জামিনে মুক্ত হন। মুক্ত হয়ে ওই ব্যবসায়ী তিনটি মামলাটি করেন।
এসআই রবিউলকে গ্রামবাসী আটক করে মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্দনবাইশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ দুরুল হুদা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী জাকিউল আলম সোহেল জানান, পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন হানযালা। তার ওপর প্রচুর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন হানযালা।
মামলার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, সুনির্দিষ্ট মামলায় হানযালাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পরদিনই তাকে আদালতে পাঠানো হয়। ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়নি। তাকে কোনো মিথ্যা মামলাও দেওয়া হয়নি। তার কাছে চাঁদা দাবির বিষয়টিও সম্পূর্ণ মিথ্যা।