অনেক টাকা পাচার হয়েছে, বিভিন্ন দেশ এই সুবিধা দেয় আমরাও দিচ্ছি : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৭ পিএম, ১১ জুন,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:২৯ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার হওয়া টাকা বৈধ করার সুবিধা দেওয়ায় অর্থ পাচারকারীরা উৎসাহিত হবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেখুন, এটিকে সেভাবে দেখলে হবে না। দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। আমরা সেই সুযোগটা দিচ্ছি। যদি এই সুযোগে সুফল না আসে, তাহলে আমরা এই সুযোগ রাখব কেন? এবার এই বাজেটে একটা সুযোগ দিলাম, এর থেকে সুফল আমরা পেতে পারি এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে।’
আজ শনিবার (১১ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাজেট প্রতিক্রিয়া গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, করোনা–উত্তর পরিস্থিতি ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির ওপর যে চাপ সৃষ্টি করেছে তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট সম্পূর্ণভাবে বাস্তবসম্মত ও মানবিক। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীল জাতি গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট এটি। সংকটের মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট এটি। এই বিশাল বাজেট বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতার প্রতীক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দিন দিন ডলারের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর এখনো কমেনি। এমনও দেখা গেছে, আগামীকাল অবসরে যাচ্ছেন, অথচ আজকে বিদেশ সফর থেকে এসেছেন। এ ছাড়া উপসচিবের ওপরের কর্মকর্তাদের ৩০-৪০ লাখ টাকা বিনা সুদে দেওয়া হয় গাড়ি কেনার জন্য। প্রতি মাসে ওই গাড়ি পরিচালনা করার জন্য আলাদা ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তারপরও দেখা যায়, ওই গাড়িও ব্যবহার করছে, আবার সরকারি গাড়িও ব্যবহার করছে। রাষ্ট্রীয় অর্থের অপব্যয় ও অপচয় রোধ করার ব্যাপারে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু বলা হয়নি।
এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, বাজেটে কেন? এটা সরকারের নীতি। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, অকারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর নিষেধ। কথায় কথায় চলে যাবে, যার ইচ্ছা সেই চলে যাবে—মন্ত্রী বা কর্মকর্তা হোক, কারও ব্যাপারে এটা আর উৎসাহিত করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তো সামারি সই করেন, তিনি এখন তা সই করছেন না।
সরকার মেগা প্রকল্পে ব্যয় বাড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, এই মুহূর্তে মেগা প্রকল্পে ব্যয় না বাড়ালেও হয়। আপনি কী মনে করেন? জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি কোথায়? ৪১ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্য সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করছে। তারা এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ এখনো এখানে আছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে না নেওয়া হলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে। ফখরুলের এই বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার কী জন্য দায়িত্ব নেবে? তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত আছেন, বাসায় থাকার অধিকার পেয়েছেন। এটা প্রধানমন্ত্রীর উদারতা, মানবিকতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো বাধা নেই। তাদের এত যদি ইচ্ছা হয় দেশের বাইরে থেকে চিকিৎসক আনুক। অসুবিধা কোথায়, টানাটানি করছে কেন? আর এ ব্যাপার আমি বলতে চাই না। যেহেতু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে, আপনারা তাদের সঙ্গে কথা বলুন।’