বিমানবন্দরের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয় : সালমান এফ রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ৯ মে,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:০৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, আমি বিমানবন্দরের কার্যক্রমে সন্তুষ্ট নই। অনেক অভিযোগ আসছে। অপ্রয়োজনীয় হয়রানির ঘটনা ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী এসবের সমাধান ও সমন্বয়ের কথা বলেছেন। আজকের পরিদর্শনের পর যদি দেখি অভিযোগের হার কমছে না, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আজ সোমবার (৯ মে) বিকেল ৪টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শনে আসেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। আকস্মিক বিমানবন্দর পরিদর্শনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বিমানবন্দরে নানা হয়রানি ও অপ্রয়োজনীয় ভোগান্তির খবর প্রকাশ হচ্ছে। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরিদর্শনে এসেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পরিদর্শন করে দেখে আসো কী কী সমস্যা বিমানবন্দরে। এখানে প্রধানমন্ত্রীর সচিবও রয়েছেন। শাহজালাল বিমানবন্দর পরিদর্শনে কোন ধরনের সমন্বয়হীনতার ও অভিযোগের সত্যতা পেলেন, জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, দুই তিন জায়গায় হয়রানির কথা শুনেছিলাম। কোভিডের সার্টিফিকেট এনেও এখানে দীর্ঘ লাইন হতো। এখানে এখন কিউআর কোড নিয়ে আসয় লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে না। যারা কিউআরকোড আনেন না তারা ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন, যাওয়া ও আসায় ইমিগ্রেশনের সময় টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে পাসপোর্ট সিল করে না। অনেক সময় ইমিগ্রেশনই হয় না বা আননেসেসারি হয়রানি করা হয়। আমরা আজ এসবির চিফকেও নিয়ে আসছি। তিনিও শুনেছেন। এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পেলে ইমিগ্রেশনের সেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে শিগগিরই অ্যাপ উদ্বোধন করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশনের সময় ইমিগ্রেশন অফিসার হয়রানি করলে, টাকা চাইলে অভিযোগ করা যাবে অ্যাপসে। অ্যাপস চালু হলে অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করার প্রবণতাও কমে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, এখানে সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠান আছে তাদের কর্মকর্তাদের আমি আজ বলেছি, ঢাকায় যারা আসে তারা প্রথম বিমানবন্দরেই নামে। এটাই প্রথম এন্ট্রি। এর বাইরে কী হয় সেটা তো পরে। কিন্তু বিমানবন্দরেই যদি অভিজ্ঞতা খারাপ হয় তাহলে কিন্তু বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বা ইতিবাচক ভাবমূর্তি বা ধারণা তৈরি হয়। এখানে যদি নেতিবাচক ধারণা হয় তাহলে দেশের ইমেজ নষ্ট হয়। এটা বন্ধ করতে হবে। আমাদের দেশে বিদেশি আসছে তার সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা আমাদের করতে হবে।
কাস্টমস সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেক যাত্রী সোনা আমদানি করেন। কিন্তু সেটা আনলে ট্যাক্স দিতে হবে। এটাই নিয়ম। কিন্তু ডিক্লারেশনে তারা এমাউন্ট দেয় এরপর টাকা দিতে ব্যাংকে যায়। কাস্টমস থেকে ব্যাংক বেশ দূরে। সে জন্য আমরা সময়ক্ষেপণ বন্ধ করতে কাস্টমস ও ব্যাংক পাশাপাশি আনার কথা বলেছি। কাস্টমস আশ্বস্ত করেছে। আর কাস্টমসে আসা ব্যাগেজ প্রি স্ক্যানিং করা যায় কি না সেটা আমরা পরীক্ষা করতে বলেছি। কারণ প্রিস্ক্যানিং করা গেলে কাস্টমসের বাইরের চাপ কমবে। শুধু সেই ব্যাগেজ চেক করা হবে যেটা আগেই স্ক্যান করে মার্ক করা হয়েছে। যেটা বিদেশে হয়। ওনারা বলছেন, থার্ড টার্মিনালে এসব ব্যবস্থা থাকবে। ই-গেট এখানে বাস্তবায়ন হয়নি। ওভার অল অনেকগুলো হয়রানি, ভোগান্তির অভিযোগ শুনছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আজকের পরিদর্শন। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর। আশা করছি এসবের সমাধান হবে।
জমজমের পানি আনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিমানে আনা যাবে না, অনলাইনে অর্ডার করলে বাসায় মিলবে জমজমের পানি। সৌদি সরকার পরিষ্কার করে দিয়েছে, ব্যক্তিগত লাগেজে জমজমের পানি আনা যাবে না। জমজমের পানি বেচাকেনার কোম্পানি আছে। সেই কোম্পানি থেকে জমজমের পানি কিনতে অনলাইন সেবা আছে। অনলাইনে অর্ডার করলে বাসায় পৌঁছে যাবে জমজমের পানি। এটা ওমরা হজের যাত্রীরা অনেকে জানেন না। লাগেজে জমজমের পানি আনছেন। তখন সৌদি এয়ারলাইন্স লাগেজ দুদিন পর পাঠাচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ট্রলি আর কোভিড একসঙ্গে জড়িত। আগে ট্রলিতে লাগেজ রেখে কোভিড টেস্ট করতে যেতেন যাত্রীরা। এখন তো কোডিভ সার্টিফিকেট লাগছে না। তাই ট্রলির ওপর চাপ নেই। আর সব কিছুতে আউট সোর্সিং করা যায় না। যেমন কাস্টমস ইমিগ্রেশন কিন্তু সোর্সিং করা সম্ভব নয়। আমরা সেটা এড্রেস করছি।