ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৭ পিএম, ৫ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩৩ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ঈদুল ফিতরের ছয় দিনের ছুটি শেষে আজ বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে সরকারি সব অফিস। এ লক্ষ্যে ঈদের একদিন পরই গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। বুধবার (৪ মে) দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুপুরের পর যাত্রীবাহী বাসগুলো ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে। সড়কপথে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে যাত্রীর চাপ দেখা গেছে। এ দিন দুপুরের পর গাবতলী বাস টার্মিনালে দূরপাল্লার অনেক বাস এসেছে। বৃহস্পতিবার যাদের অফিস করতে হবে তারা অনেকটাই নির্বিঘেœ ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। শ্যামলী পরিবহনের বাসে ঢাকায় পৌঁছে শওকত হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার অনেকেই অফিসে আসবেন না। তাই তাকে অফিসে উপস্থিত থাকতেই হবে। এ কারণেই একেবারে নির্বিঘেœ গতকাল ঢাকায় চলে এসেছি। মহাখালী ও সায়েদাবাদ টার্মিনালেও ঈদ শেষে লোকজনকে ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে। সরকারি ও বেসরকারি বেশিরভাগ অফিসে বৃহস্পতিবার থেকে কার্যক্রম শুরু হবে। ছুটি না থাকায় তাই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে বলে জানান যাত্রীরা। এক একটি বাস ২০ থেকে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে ফিরছে ঢাকায়। পরিবহন কর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী শনিবার (৭ মে) বিকেল থেকে ঢাকামুখী মানুষের চাপ বাড়বে। অনেকেই শনিবার রওনা হয় রবিবারে (৮ মে) অফিস করবেন। তবে রাস্তার পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় যাওয়ার সময় যেমন ভোগান্তি হয়নি, তেমনি আসার সময় ভোগান্তি হবে না বলেও আশা করছেন তারা।
এদিকে, রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো সকালে সদরঘাট টার্মিনালে এসে পৌঁছেছে। বর্তমানে সব লঞ্চে যাত্রী তুলনামূলক কম হলেও আগামী শনিবার থেকে লঞ্চগুলোতেও যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ব্যতিক্রম চিত্র পাওয়া গেছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটে। বুধবার দুপুরের দিকেও এই ঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ দেখা গেছে। যারা ঈদের আগে যেতে পারেননি তারাও এখন বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে ঘাটে মানুষের চাপ বেড়েছে। এই ঘাটে দুপুর পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র। শিমুলিয়া ঘাটের নদীবন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, এই ফেরিঘাটে আজও ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ রয়েছে। দশটি ফেরি এই ঘাটে যাত্রী এবং যানবাহনগুলো পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিটি ফেরিতেই ব্যাপক চাপ রয়েছে। ঈদ শেষ হলেও বিপুল সংখ্যক যাত্রী এখনও গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। এ জন্য ৮৫টি লঞ্চ ছাড়াও ১৫৪টি স্পিডবোট চলছে।
সকালে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার কারণে আধাঘণ্টা লঞ্চ-স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, পরে আবারও এসব চলাচল শুরু হয়। যাত্রীরা ফেরি, লঞ্চ স্পিডবোট পদ্মা পার হচ্ছেন। আর ঘাটে বর্তমানে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে এরই মধ্যে মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী বাসগুলো নদী পার হয়েছে। তবে ঢাকামুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ তুলনামূলক কম বলেও জানান তিনি। ঈদের রেশ কাটল বুঝি! গতকাল খুলছে অফিস। টানা ৬ দিন ঈদ আনন্দে মেতেছিল মুসলমানরা। এবার তাদের কর্মে যোগ দেয়ার পালা। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। যদিও এখনো নগরে ফিরতে পারেনি শেকড়ের টানে গ্রামে যাওয়া নাগরিকরা। আজও রাস্তা-ঘাট ফাঁকা। অনেকেই গতকাল ছুটি নিয়েছেন। যারা গতকাল ছুটি নিয়েছেন তারা শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে রবিবার থেকে অফিস শুরু করবেন। মঙ্গলবার (৩ মে) সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। গত ২৯ ও ৩০ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) ছিল সপ্তাহিক ছুটি। এরপর ১ মে (রবিবার) ছিল মে দিবসের ছুটি। এরপর ২, ৩ ও ৪ মে (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) ঈদের ছুটি কাটিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার একদিন খোলা থাকার পর আবার দুই দিন (৬ ও ৭ মে) সাপ্তাহিক ছুটি। তাই যারা ৫ মে ছুটি নিয়েছেন তারা টানা ৯ দিনের ছুটি পেতে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তাদের আগামী রবিবার (৮ মে ) অফিস করতে হবে।
ঢাকার বাইরে ঈদ করতে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেশিরভাগই ৫ মে ঐচ্ছিক ছুটি নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে যারা ছুটি না পেয়েও দূর-দূরান্তে গিয়ে ঈদ করেছেন তারা হয়তো বৃহস্পতিবার এসেই অফিসে যোগ দেবেন। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদ কেটেছে বিধিনিষেধের মধ্যে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এবার বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার আগের রূপে উদযাপিত হচ্ছে ঈদ।