সরকার শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে - প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩১ পিএম, ১ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৪৯ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
আজ রবিবার মহান মে দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা ও শ্রমিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক যে কোনো খাতে নিয়োজিত কোনো শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনাজনিত কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হলে অথবা মৃত্যুবরণ করলে, জরুরি চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ ও দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এবং শ্রমিকদের সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্যও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের সার্বিক কল্যাণে আর্থিক সহায়তা প্রদানে একটি কেন্দ্রীয় তহবিল গঠন করেছি এবং সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। সব সেক্টরে শ্রমিকদের বেতন ভাতা বাড়ানো হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য ও সংহতির প্রতীক। এই ঐতিহাসিক দিনে আমি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব মেহনতি মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে রক্তাক্ত আন্দোলনে শ্রমিকের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আত্মাহুতি দেয়া বীর শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’ অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তিনি ১৯৭২ সালে শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন। তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রম কল্যাণ নিশ্চিতকরণে ‘জাতীয় শ্রমনীতি, ২০১২’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি নীতিমালা, ২০১৩’ এবং ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি, ২০১১’ প্রণয়ন করেছি। পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নে ‘জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদফতরকে অধিদফতরে উন্নীত করা হয়েছে। শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদারকরণে আমরা শ্রম পরিদফতরকে সম্প্রতি অধিদফতরে রূপান্তরিত করেছি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। এতে এক কোটির বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। দেশি-বিদেশি সব বিনিয়োগকারী যত্রতত্র শিল্প স্থাপন না করে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী শ্রমিকদের জন্য শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করা হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের সমান মজুরি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং নারী শ্রমিকদের নিরাপদ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দরে দুইটি বহুতল শ্রমজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সরকার শ্রমজীবী মানুষের পাশে থেকে ত্রাণ বিতরণসহ সর্বাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। শ্রম অধিদফতরের মাধ্যমে রফতানিমুখী পোশাক এবং চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া ও দুস্থ শ্রমিকদের মাসিক ৩ হাজার টাকা করে ৩ মাস আর্থিক সুবিধা প্রদানে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও দেশের সার্বিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলব, ইনশাআল্লাহ।’ প্রধানমন্ত্রী মহান মে দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর : বাসস