টিআইবির গবেষণা নিয়ে বিএনপির মন্তব্য মূর্খতার শামিল : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০২ পিএম, ২৮ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:২০ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অপেশাদার গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে বিএনপির মন্তব্য মূর্খতার শামিল।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার দেশের মানুষকে বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করায় সারাবিশ্ব বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। তা সত্ত্বেও গবেষণার নামে মিথ্যাচার এবং দেশকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য টিআইবির বিরুদ্ধে প্রয়োজনবোধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে গত ২৫ এপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনার টিকা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) যা বলেছে তাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ সময় তিনি করোনার টিকা নিয়ে টিআইবির গবেষণা কল্পনাপ্রসূত ও অনেক ভুল তথ্য দিয়ে তারা রিপোর্ট তৈরি করেছে বলেও জানান।
টিকা কার্যক্রম নিয়ে টিআইবির গবেষণা রিপোর্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এটা করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, টিকা কার্যক্রমে ৬৭ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। এ টাকা তো এখন ফকিরকে ভিক্ষা দিলেও নেয় না। তাই ঘুষের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ সময় তিনি বলেন, টিকা কেনার ক্ষেত্রে ৪০ হাজার কোটি খরচ হয়নি। ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর যেসব টিকা ফ্রিতে পাওয়া গেছে তার মূল্য ধরা হয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা।
কোভিড নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদানে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। ১৩ কোটি প্রথম ডোজ, দ্বিতীয় ১১ কোটি ৬০ লাখ ও বুস্টার ১ কোটির বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি টিআইবি একটি রিপোর্ট দিয়েছে সেটিতে বেশ কিছু তথ্য আছে যা সঠিক নয়। তারা এমন কিছু তথ্য তুলে ধরেছে যাতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। তারা যে সার্ভে করেছে তাতে দেড় লাখ বুথের মধ্যে ১০৫টি বুথের তথ্য নিয়েছে। ১২ কোটির বেশি মানুষ টিকা দিলেও তারা সার্ভে করেছে মাত্র ১৮০০ জনের।
সচেতন না করলে ৯৬ ভাগ মানুষ কীভাবে টিকা পেল? যারা টিকা নেয়নি তারা নিজের ইচ্ছায় নেয়নি এমন কথাও বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবির রিপোর্টে ভুল থাকলেও আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কেননা কেউ চাইলে গবেষণা করতেই পারে। তবে ভবিষ্যতে দেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো তথ্য দিলে আইনি ব্যবস্থার নেওয়া হতে পারে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয়, টিকা ক্রয়ে এ খরচ সর্বোচ্চ ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। ‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে এ গবেষণাপত্র প্রকাশ করে টিআইবি।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকা প্রদানের খরচের ক্ষেত্রে সরকারি হিসাব এবং টিআইবির হিসাবের মধ্যে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার ফারাক দেখা যায়।
টিআইবি জানায়, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গত মার্চ মাসে বলেছিলেন, কোভিড-১৯ টিকা ক্রয় এবং বিতরণের ক্ষেত্রে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
এসব টিকা কত দামে কেনা হয়েছে তার বিস্তারিত কখনোই তুলে ধরেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। টিআইবি তাদের গবেষণায় বলছে, টিকা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়।
তারা দাবি করছে, যেহেতু সরকারের তরফ থেকে টিকার দাম সম্পর্কিত কোনো তথ্য তুলে ধরা হয়নি, সেজন্য টিআইবি বিভিন্ন সূত্র থেকে টিকার দাম সম্পর্কিত তথ্য জোগাড় করেছে।