বিচারবহির্ভূত সব হত্যার স্বচ্ছ তদন্ত এবং রিপোর্ট দেখার অপেক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ২৬ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৪৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে প্রায় ৪ মাস বন্ধ থাকার পর ফের র্যাবের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহতের ঘটনাসহ সাম্প্রতিক সময়ে বিচারবহির্ভূত হত্যার যেসব অভিযোগ উঠেছে তার স্বচ্ছ তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার জবাবে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র সোমবার রাতে এমনটাই জানিয়েছেন। গত ১৭ এপ্রিল কুমিল্লায় সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. রাজু এবং দুদিন পর (২০ এপ্রিল) মানিকগঞ্জে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য কাউসার র্যাবের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, বিচারবহির্ভূত সব হত্যার অভিযোগ তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব মেকানিজম রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে সম্যক অবহিত। অভিযোগগুলোর বিষয়ে মার্কিন সরকারের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করে বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনাসহ বিচারবহির্ভূত সব হত্যার স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি। আমরা দেখতে চাই সরকার হত্যাকান্ডগুলোর তদন্ত কিভাবে করে, আর তাতে কী রিপোর্ট আসে। সেইসব তদন্তের ফলাফল প্রকাশ না হওয়া অবধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রশ্নে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অপেক্ষায় থাকবে বলেও ক্ষুদে বার্তায় ইঙ্গিত দেয়া হয়। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব ও বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌথভাবে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন ট্রেজারি ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট। ওই নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের সম্পর্কে বেশ অস্বস্তি তৈরি করেছে। যা কাটানোর জন্য উভয়ের মধ্যে সিরিজ বৈঠক তথা সংলাপ হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার জেরে নাটকীয়ভাবে বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের বিষয়টি বাইডেন প্রশাসনের নজরে আপাতত বাহিনী হিসেবে র্যাবের ওপর থেকে আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায় ঢাকা। কিন্তু না, প্রত্যাহারের ওই তোড়জোড়ের প্রেক্ষিতে রবিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে ঢাকাস্থ নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার দেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন। বলেন, র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের সুরাহায় সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ এবং বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে কোনো অবস্থাতেই আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই! বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়নে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তৃতা করছিলেন নবনিযুক্ত ওই মার্কিন দূত। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সেমিনারের উন্মুক্ত সেশনে অন্যান্যের মধ্যে র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও বক্তব্য রাখেন। সেখানে তিনি র্যাবের ইতিবাচক কার্যক্রম তুলে ধরে সংস্থাটির অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।