আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনার ওপর প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৪ পিএম, ২৩ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৮ এএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
পানি সম্পর্কিত অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভালো অনুশীলন, জ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাগ করে নিতে শক্তি একত্রিত করতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার (২৩ এপ্রিল) জাপানের কুমামোটোতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ এশিয়া-প্যাসিফিক ওয়াটার সামিটে প্রদর্শিত এক ভিডিও বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনার জন্য অববাহিকাভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালনসহ আঞ্চলিক বা উপআঞ্চলিক সহযোগিতাকে গুরুত্ব দিই। তিনি বলেন, আজকের মানুষ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পানি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার পূরণে দায়বদ্ধ। এর মধ্যে পানি সম্পর্কিত এসডিজিও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তরুণদের অবশ্যই ক্ষমতায়ন করতে হবে যাতে তারা পানির অন্তর্ভুক্তি, দক্ষতা ও স্থায়িত্বের জন্য দায়িত্বশীল অংশগ্রহণকারী হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানি জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক এবং এটি টেকসই উন্নয়ন ও শান্তির সংস্কৃতি প্রচারের জন্য মৌলিক। তিনি বলেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারি থেকে ‘ভালোভাবে ফিরে আসার’ জন্য আমাদের সঠিক পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
২০১৬ সালে তিনি পানি সম্পর্কিত জাতিসংঘের উচ্চ-স্তরের প্যানেলের সদস্য ছিলেন যেটি একটি ‘কল টু অ্যাকশন’ গ্রহণ করেছিল বলেও স্মরণ করেন তিনি।
আগামী বছরের ওয়াটার অ্যাকশন দশকের মধ্যমেয়াদী পর্যালোচনা আমাদের অ্যাকশন এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে। কুমামোটো ঘোষণা সেই প্রক্রিয়ায় একটি কার্যকর অবদান হবে বলেও যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার পানি ব্যবস্থাপনায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, পুরো সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে যেখানে এর ৮৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের নিরাপদ পানীয়, পানি এবং উন্নত স্যানিটেশন সুবিধার প্রবেশ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা খোলামেলা মলত্যাগের বিষয় প্রায় শেষ করে ফেলেছি। পানিবাহিত রোগের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই একটি নিরন্তর প্রচেষ্টা। আগামী মাস থেকে আমরা রাজধানীতে ২৩ লাখ কলেরা টিকা প্রদান করব।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পানি সংক্রান্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি উল্লেখ করেন যে বন্যার বাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার, উপকূলীয় পোল্ডার, গ্রিন বেল্ট, ভাসমান কৃষি, নদী খনন, শহুরে ঝড়ের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বিনিয়োগ বাংলাদেশের সহনশীলতা বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা পূর্বসতর্কতা ব্যবস্থা এবং গোষ্ঠীভিত্তিক হস্তক্ষেপের বিকাশ থেকে উপকৃত হয়েছি। আমাদের প্লাবনভূমি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য পানির প্রাপ্যতার ঋতুগত বৈচিত্র্য পরিচালনা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি সহনশীল ও সমৃদ্ধ ব-দ্বীপের দিকে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছে। তিনি বলেন, সরকার পরিকল্পনার আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সম্পদ সংগ্রহের জন্য আগামী মাসে একটি আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সম্মেলনের আয়োজন করছে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব সম্পর্কে বাংলাদেশ সচেতন।
জাপানের কুমামোটো সিটি ও এশিয়া-প্যাসিফিক ওয়াটার ফোরাম (এপিডব্লিউএফ) যৌথভাবে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি- সর্বোত্তম অনুশীলন ও পরবর্তী প্রজন্ম’ শীর্ষক এই সামিটের আয়োজন করে।