বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে থাকবে - প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৪ পিএম, ২৪ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৩ এএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর কখনও পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে না। বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে থাকবে এবং সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নয় ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের হাতে স্বাধীনতা পদক-২০২২ তুলে দিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে পরিকল্পিতভাবে কাজ করায় বাংলাদেশ শিক্ষা, কৃষি, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন খাতে অগ্রগতি করতে পেরেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে সব ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, ‘৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অর্জনকে ধ্বংস করা হয়েছিল। আমরা যে বিজয়ী জাতি, সে কথাটাই ভুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। এটাই ছিল ২১ বছরের অন্ধকারের যুগ। লক্ষ্য নির্ধারণ করে যথাযথভাবে পরিকল্পনার মাধ্যমে যেকোনো কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলেও এ সময় নিজের বিশ্বাসের কথা জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে যদি কাজ করা যায়, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে প্রতিটি প্রকল্পকাজ প্রণয়ন করা যায় এবং বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে যেকোনো কাজ অর্জন করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা সেভাবেই কাজ করেছি। এ সময় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ঠিকঠাকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সরকারপ্রধান। শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে সরকারে যারাই আসবে, তারা এ দিকটি লক্ষ্য রেখে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ আর কখনও পরমুখাপেক্ষী থাকবে না। বাংলাদেশ মর্যাদা নিয়ে মথা উঁচু করে থাকবে এবং সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। করোনা মহামারি মোকাবিলা করেও বাংলাদেশে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে পাশে থাকা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশের কল্যাণে অবদান রাখায় এ বছর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন নয় ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন পর নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ বেসরকারি সম্মাননা হিসেবে এ পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রাখা বক্তব্যে দীর্ঘদিন পর নিজে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে নেমে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দীন আহমেদ ও আব্দুল জলিলের কাছে গিয়ে তাদের পুরস্কার তুলে দেন। এবার ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে ছয়জন স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। তারা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম (মরণোত্তর), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদদীন আহমেদ, মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস (মরণোত্তর) এবং সিরাজুল হক (মরণোত্তর)। ‘চিকিৎসাবিদ্যা’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া এবং অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম এবং ‘স্থাপত্যে’ মরহুম স্থপতি সৈয়দ মঈনুল ইসলাম স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া ‘গবেষণা ও প্রশিক্ষণে’ পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করায় বিদ্যুৎ বিভাগকে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ দেয়া হয়। গত ১৫ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ‘সাহিত্য’ ক্ষেত্রে মরহুম আমির হামজাকে রাষ্ট্রীয় এ সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। তালিকা ঘোষণার পরই আমির হামজাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সমালোচনার মুখে গত ১৮ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকার ‘সাহিত্য’ ক্যাটাগরি থেকে মরহুম আমির হামজার নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংশোধিত তালিকায় ৯ ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল। পরে ওই তালিকায় যুক্ত হয় ‘বিদ্যুৎ বিভাগ’।