মুজিববর্ষে দেশের প্রত্যেকটি ঘর আলোকিত করেছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৯ পিএম, ২১ মার্চ,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১০:২৫ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার পায়রায় দেশের সবচেয়ে বড় এবং অত্যাধুনিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার সাফল্য তুলে ধরে বলেছেন, মুজিববর্ষে দেশের প্রত্যেকটি ঘর আলোকিত করেছে সরকার, এটাই সব থেকে বড় সাফল্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে আমরা আলোকিত করতে পারলাম এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। আমরা আলোকিত করেছি এদেশের প্রত্যেকটি মানুষের ঘরকে।
তিনি আজ এখানে একটি অনুষ্ঠানে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তিসহ কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। পরিবেশবান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির সাহায্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার মাধ্যমে, বাংলাদেশ ‘মুজিব বর্ষে’ দেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ কভারেজের আওতায় আনার সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করে আরেকটি মাইলফলক অর্জন করেছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব থমকে যাওয়ার পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগতভাবে প্রথম কোনো উন্নয়ন প্রকল্পে সশরীরে সফর। প্রধানমন্ত্রী রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে জাতির জন্য উপহার হিসেবে উল্লেখ করেন।
পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতার জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দক্ষিণ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অন্তর্গত রামনাবাদ নদীর পাশে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ১০০০ একর জমিতে নির্মিত হয়েছে এবং এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের ১৩তম দেশে পরিণত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখন ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে, দক্ষিণ এশিয়ার যে দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ এবং ৭৪ শতাংশকে বিদ্যুৎ নেটওয়ার্কের আওতায় এনেছে। বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২৫,৫১৪ মেগাওয়াট হয়েছে যা ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে ৪,৯৪২ মেগাওয়াট ছিল। এর মধ্যে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে এবং ১৯,৬২৬ মেগাওয়াট স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে।
সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে স্থানীয় চর সোনারামপুর, আশুগঞ্জ, রাঙ্গাবালী, মনপুরা, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামফলক উন্মোচন করেন এবং শান্তির প্রতীক ১৩২০টি পায়রা অবমুক্ত করেন এবং প্লান্টের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম ঘুরে দেখেন।
এর আগে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন হেলিপ্যাডে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছালে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি এবং পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি অডিও-ভিডিও উপস্থাপনাও প্রদর্শিত হয়।
পর্যটন স্পট কুয়াকাটা থেকে পায়রা পাওয়ার প্লান্ট এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজমান ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো: হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা) লিমিটেডের মহাপরিচালক (ডিজি) ইঞ্জিনিয়ার এ এম খুরশেদুল আলম।