ককটেল বিস্ফোরণ : বিএনপির দন্ডপ্রাপ্ত ২ নেতার জামিন হাইকোর্টে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৫২ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
২০১৩ সালে বিএনপিসহ ১৮ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে রাজধানীর ভাষানটেক থানা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত ১০ নেতাকর্মীর মধ্যে দুজনকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- মো. লিটন ও আবদুর রহমান। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রবিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর একক বেঞ্চ এ জামিন আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান। এদিন আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট আক্তারুজ্জামান ও ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান।
২০১৩ সালে বিএনপিসহ ১৮ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে ভাষানটেক থানা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় দলটির ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ৫ আসামির পক্ষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক তিনটি আপিল আবেদন দায়ের করা হয়। এই ৫ আসামি হলেন- সুমন চন্দ্র, সোহেল, কাউসার, লিটন এবং আবদুর রহমান। এর মধ্যে লিটন ও আবদুর রহমানকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান বলেন, মামলার রায়ে আসামিরা ন্যায়বিচার পাননি। কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়নি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের পাশাপাশি জামিন আবেদনও করা হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারি ঢাকার ৯নং বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আমিরুল ইসলাম ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। কারাদন্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ১৪ নেতাকর্মীকে খালাস দেন আদালত। কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সুমন চন্দ্র, জসিম, আমিনুল, সোহেল, কাউছার, জুয়েল, আব্দুর রহমান, শহীদ, মহসিন ও লিটন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ইসমাইল, আজাদ, বকুল হোসেন, নজরুল ইসলাম, নাডু জামান, আব্দুল কালাম, জিলাফি বাচ্চু, বিকু জামান, জলিল ইসলাম, ফিরোজ, শামীম, কালা বাচ্চু, আলতাফ হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম। ২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর ভাষানটেক থানার উপপরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম নাশকতার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর বিএনপিসহ ১৮ দল কর্তৃক ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভাষানটেকে বিক্ষোভ মিছিলের জন্য বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার ও ককটেলসহ সমবেত হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৫০-৬০ জন নেতাকর্মীকে দেখতে পায়। পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টাকালে ১০ জনকে আটক করা হয়। আব্দুর রহমান নামের এক আসামির কাছ থেকে তাঁতী দলের ব্যানার আর সুমন, জসিম, আমিনুল, সোহেল ও জুয়েলের কাছ থেকে ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। মামলাটি তদন্ত করে একই থানার উপ-পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান ২০১৪ সালের ১ মার্চ আদালতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামিপক্ষে চারজন সাফাই সাক্ষ্য দেন।