সরকারি প্রতিষ্ঠানের করছাড়ের আবেদনে বিব্রত হই : এনবিআর চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৩ পিএম, ২৬ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:০৫ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বাড়াতে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে করছাড় নেয়ার মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবসের অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ট্যাক্স-জিডিপির রেশিও নিয়ে অনেক কথা হয়। গত বছর আমরা একটা গবেষণা করেছি, সেখানে দেখেছি আমাদের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও কিছুতেই ৯ শতাংশের বেশি হয় না। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানও করছাড়ের আবেদন করে। সরকারি প্রতিষ্ঠান যখন করছাড়ের আবেদন করে তখন আমরা বিব্রত হই। সরকারের এক খাতের টাকা আরেক খাতে যাবে। এই অভ্যাস বন্ধ করতে হবে, কর দেয়ার কালচার বেগবান করতে হবে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে শিল্প কলকারখানায় কাঁচামাল আমদানি করতে করছাড় দিয়ে থাকি। এতে দেশের উন্নয়ন হয়, কর্মসংস্থান তৈরি হয়। আমরা দেখছি এগুলো যদি না দেই তাহলে ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও ১৬ শতাংশ হতো। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কাস্টমস নিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে চাই। গত অর্থবছরে কাস্টমসে গ্রোথ ছিল ২৭ শতাংশ। এবার তা আরও বেগবান করতে চাই।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের অবকাঠামোর উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু এখন শিল্প কারখানা করতে হবে। কারণ পদ্মা সেতু চাকরি দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, ওভারইনভয়েস ও আন্ডার ইনভয়েসের মাধ্যমে বিরাট অংকের টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে চলে যায়। প্রতিনিয়ত আমাদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকরিজীবীরা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। এখানে আপনারা (কাস্টমস) অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। ডিজিটালাইজেশন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সিস্টেম ডিজিটাল হলে কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ কমে যায়। আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে ফাঁকির সুযোগ কমাতে হবে।
কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, আপনাদের শপথ নিতে হবে, কোনোভাবেই ব্যবসায়ীরা যেন বিদেশে টাকা পাচার না করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া যে এত উন্নত হলো, কীভাবে সম্ভব হয়েছে? মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে তাদের দেশে বড় ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা ছিল। এর মাধ্যমে তারা বৈদেশিক মুদ্রাকে রক্ষা করে ভারি শিল্পের দিকে গেছে। কাজেই আমাদেরও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে কঠোর হতে হবে।
কর-জিডিপি রেশিও নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কর-জিডিপি রেশিও অনেক কম। সেটা ১০ ভাগেও উত্তীর্ণ হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল বা ভুটানের চেয়েও অনেক কম। আমাদের দুই জিনিসের প্রতি নজর দিতে হবে। একটি মানিলন্ডারিং, অন্যটি কর-জিডিপি অনুপাত। এই দুটি বিষয়ে কীভাবে দৃষ্টান্তমূলকভাবে উত্তরণ পেতে পারি, সেটার বিষয়ে লক্ষ্য নিয়ে আপানরা কাজ করবেন।