লবিস্ট ফার্মে বিএনপি-জামায়াতের দেয়া টাকার হিসাব প্রকাশ করা হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ১৭ জানুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০৬ এএম, ৫ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কত টাকা বিএনপি খরচ করেছে তার হিসাব সরকারের কাছে রয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত গত পাঁচ বছরে কতগুলো লবিস্ট ফার্মে টাকা দিয়েছে তার চুক্তি, টাকা পয়সার হিসাব আছে এটা প্রকাশ করা হবে। কে, কোন অ্যাকাউন্টে দিয়েছেন সবকিছু আছে, এর তদন্ত দাবি করব।
আজ সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের সমস্যা যদি থাকে, তা এই সংসদে আলোচনা করব। রাজপথে আন্দোলন করব, নির্বাচন নিয়ে কথা বলার জন্য নির্বাচন কমিশনে যাব। তাদের জন্য সবচেয়ে বড় সুযোগ ছিল রাষ্ট্রপতি যে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন, তাতে যোগদান করা। সেটা না করে বিদেশের দরজায় কড়া নেড়ে কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, মীর জাফর বিদেশিদের সঙ্গে চক্রান্ত করে এ দেশের সূর্য ডুবিয়ে দিয়েছিল। আবার সেই চক্রান্ত শুরু হয়েছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়। অবরোধের ডাক দেয়া হয়। তাতে ব্যর্থ হয়ে টাকা পয়সার খেলা অব্যাহত চলতে থাকে। এটা বন্ধ হতে হবে চিরতরে। এ চক্রান্তের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের বিচার করতে হবে।
তারা বলেন, দেশনেত্রী। আমি বলব বেগম খালেদা জিয়া হলেন দেশ বিরোধী নেত্রী। দেশদ্রোহিতার কারণে তার পুনরায় বিচার করতে হবে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য কোরআন শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, জানা সত্যেও মিথ্যাকে গোপন করিও না। এই বক্তব্যটি তিনি নাকি তার রাজনৈতিক জীবনে প্রতিপালন করছেন। মুসলমান হিসেবে যদি দাবি করে থাকেন। সেই মিথ্যাগুলো তারা যেন গোপন না করেন। এই সময় হারুনুর রশীদ হাত উঁচিয়ে নিজে করছেন বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি বলেছে তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে না। আমিতো রাজশাহীতে দেখেছি। প্রতিটি উপজেলায় তাদের প্রার্থী ছিল। তারপরও আমার নির্বচনি এলাকায় ছয়টি জায়গায় নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে দুটি জায়গায়। এবং তাদের দলের একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে রাজশাহীর জনগণ ও তার (হারুন) কোনো অভিযোগ আছে কি না? তাকে বলার অনুরোধ করব। শাহরিয়ার আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক আগেই বলেছিলেন আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করি। এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করার জন্য ইভিএমে করতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশে ইভিএমেই নির্বাচন হবে সেই পরিকল্পনা তিনি দিয়েছিলেন। এই পদ্ধতিতে যে স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব সেটা মাহবুব তালুকদারের মত নির্বাচন কমিশনারও রবিবার স্বীকার করেছেন। তিনি (হারুন) একটু আগেও কিন্তু অস্বীকার করার ভাষা পাচ্ছেন না। কোনো সমর্থন পাচ্ছেন না। সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন। আইনের চোখে দন্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে এখনও কীভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেটা জানতে চান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে বেগম খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমসে একটা কলাম লিখেছিলেন। যেটা এখনো অস্বীকার করেন। সেটার জন্য এখন তিনি ক্ষমা চাইতে পারেন। কোরআনের উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৫ সালে অ্যাকিন গর্ভমেন্ট অ্যাসোসিয়েটের সঙ্গে বিএনপির নয়াপল্টনের ঠিকানা দিয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। মাসিক ৫০ হাজার ডলারের বিনিময়ে। সেটা তিনবছর অব্যাহত ছিল। বছরে আসে প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার। এরকম আমার কাছে ১০টি ডকুমেন্ট রয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাই। প্রতিটি রাজনৈতিক দল বছর শেষে তাদের হিসাব-নিকাশ প্রকাশ করে। বিএনপিকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, এই টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে গেছে কি না? তা না হলে এতিমের টাকা খেয়ে যে টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে সেই টাকার ব্যবহার এখানে করা হয়েছে কি না সেই তদন্ত চাই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনেক উদার। যে ব্যক্তি তাকে এতবার হত্যা করতে চেয়েছিল। তার সাজা স্থগিত রেখে কারাবাস থেকে মুক্ত করে দিয়েছেন। তারপরও তাদের হয় না। তারা বলে বিদেশে চিকিৎসা করতে নেবেন। আমরা প্রতিটি কূটনীতিককে বলে দিয়েছি এটা আন্দোলন ও কথা বলার সুযোগ বাংলাদেশের আইনের মধ্যে নেই। বিএনপি যদি পারে ক্ষমতায় আসবে। এসে আইন সংশোধন করে তারপর জেল থেকে মুক্ত করে বিদেশ পাঠাবে।