আওয়ামী লীগকে বারবার ভোট দেয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ - প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৩ পিএম, ৬ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:০৪ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বারবার দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দেয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দীর্ঘ সময় সরকারে থাকার ফলে আজকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি। যেটা ২০০৮-এর নির্বাচনের ইশতেহারে আমাদের ঘোষণা ছিল। সে জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক মানের স্থাপত্য কীর্তি বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে আওয়ামী লীগ সরকার বেসরকারি খাতগুলোকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাঁচটি বছর আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। অন্তত এইটুকু দাবি করতে পারি বাংলাদেশের জন্য সেটা ছিল স্বর্ণযুগ। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে একটা আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল, তাঁরাও জীবনে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। সরকার যে জনগণের সেবক, সেটাও আমরা প্রমাণ করেছিলাম। অনুষ্ঠানে শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি স্বাধীনতার পর সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে জাতির পিতার নেয়া নানা পদক্ষেপেরও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, সে হত্যাকান্ডে তিনি আপনজন-হারা হলেও দেশের মানুষ কিন্তু তাঁদের সকল সম্ভাবনাকে হারিয়ে ফেলে। এরপর একের পর এক ক্যু হয়েছে। কত সামরিক অফিসার, সৈনিককে জীবন দিতে হয়েছে। অনেক পরিবার এখনো তাঁদের আপনজনের খোঁজ পায়নি। পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চলেছে অত্যাচার-নির্যাতন। যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই আদর্শ থেকে দেশ একেবারেই বিচ্যুত হয়ে যায়।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে এসে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভরভাবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়। যেন বিশ্বদরবারে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাথা উঁচু করে চলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (বিএমএম) দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিতে তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি শিশুদেরও অনুপ্রাণিত করবে। বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর থেকে তরুণ প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী-সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীতে যোগদানে এবং দেশপ্রেমে তরুণরা উদ্বুদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, জাদুঘরটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য একটি মাইলফলক হবে। যার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ও শিশুরা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সম্পর্কে জানতে পারবে।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এটা হবে সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তিনির্ভর সামরিক জাদুঘর। এখানে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর জন্য পৃথক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকায় এখানে আগত তরুণ থেকে বয়োবৃদ্ধরা যেমন এ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারবেন, তেমনি তরুণ প্রজন্ম সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানে আরো আগ্রহী হবে। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আরো উদ্বুদ্ধ হবে। কাজেই জাদুঘরটি শুধু প্রদর্শনীর জন্যই নয়, এটা তরুণ প্রজন্মকে যেমন আকর্ষণ করবে, তেমনি তাঁদেরকে দেশপ্রেমেও উদ্বুদ্ধ করবে। যে কারণে ক্ষুদ্র পরিসরে থাকা আমাদের সামরিক জাদুঘরকে বৃহৎ পরিসরে এবং আরো আকর্ষণীয় করে বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটারের পাশে বিজয় সরণিতে তৈরির উদ্যোগ তাঁর সরকার গ্রহণ করে। পাশাপাশি সেখানে সরকারি উপহারগুলো প্রদর্শনীর জন্য একটি তোষাখানা জাদুঘরও নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। যার নির্মাণের দায়িত্ব পায় সমারিক বাহিনী। পাশাপাশি সামরিক জাদুঘরটা যেন পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি সামরিক জাদুঘর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সেটাই তাঁর আকাক্সক্ষা ছিল, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষের যে ইতিহাস রয়েছে যেমন- আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস। সশস্ত্র বাহিনী আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক, কাজেই সে সম্পর্কে যেন আমাদের দেশের মানুষ জানতে পারে, জ্ঞানার্জন করতে পারে, তাঁদের কর্মকান্ড উপলব্ধি করতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি। জাদুঘর থেকে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল প্রমুখ। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্যরা, পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।